জুন মাস প্রায় শেষের দিকে; দীর্ঘ গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে মুক্তি দিয়ে বর্ষাও প্রায় প্রবেশ করেছে পশ্চিমবঙ্গে। ওদিকে চুপিসারে শুরু হয়েছে ভ্রমণপ্রেমী বাঙালির পূজা ভ্রমণের পরিকল্পনাও। যদি আপনার পরিকল্পনায় আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ বিরাজ করে তাহলে চোখ বুলিয়ে নিন আজকের আলোচনায়। আজ আপনাদেরকে নিয়ে চললাম Radhanagar Beach-এ।
আন্দামানের স্বরাজ দ্বীপের (Havelock Island) পশ্চিম উপকূলে রয়েছে অসাধারণ সুন্দর রাধানগর সমুদ্রসৈকত; বছর-বছর দেশ বিদেশ থেকে পর্যটকের দল ঘুরেফিরে আসেন নিখাদ সাদা বালির আবরণে ঢাকা এই বিশ্বখ্যাত বালুচরে।
বাস্তবেই রাধানগর বিচ বিশ্ববিখ্যাত। ভারত এবং এশিয়ার সেরা সৈকতগুলির তালিকায় নিয়মিত উঠে আসে Havelock Island-এর এই জনপ্রিয় বিচের নাম। ঝকঝকে সাদা বালি, চকচকে নীল জল আর চারিপাশের সবুজ বনাঞ্চলের সৌন্দর্য দিয়ে ঘেরা রাধানগর বিচ নিঃসন্দেহে আন্দামানের সেরা গন্তব্যগুলোর একটি; শান্তিতে দুটো দিন কাটানোর জন্য কিংবা রোমান্টিক হানিমুন ট্রিপের জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা।
Table of Contents

রাধানগর বিচের বিশ্বজোড়া খ্যাতি
প্রাকৃতিক বিস্ময় হিসেবে বর্ণিত, এই সৈকতটি ২০০৪ সালে প্রথম বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করে। সেবছর টাইম ম্যাগাজিন এটিকে এশিয়ার সেরা এবং বিশ্বের সপ্তম সেরা সৈকত হিসাবে ঘোষণা করে।
পরবর্তীকালে, ২০১৬ সালে ট্রিপঅ্যাডভাইজারের “ট্রাভেলার্স চয়েস অ্যাওয়ার্ডে” এটি এশিয়ার শীর্ষ ১৫টি সৈকতের মধ্যে স্থান পায়, এবং ২০২২ সালে তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা ও পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থাপনার জন্য, ২০২১ সালে, ডেনমার্ক ভিত্তিক সংস্থা, ফাউন্ডেশন ফর এনভায়রনমেন্ট এডুকেশন (FEE) রাধানগর বিচকে ” Blue Flag” শংসাপত্র প্রদান করে।
সম্প্রতি, ২০২৫ সালে, স্বরাজদ্বীপের রাধানগর বিচ আবারও ট্রিপঅ্যাডভাইজার রেটিং অনুসারে এশিয়ার ৫ম সেরা সমুদ্রসৈকতের স্বীকৃতি পায়।
সুতরাং, বলাই বাহুল্য, রাধানগর বিচ নিঃসন্দেহে অনন্য!
Tripadvisor-র তালিকায় ভারতের অন্যান্য সৈকতসমূহ
- কাবেলোসিম বিচ (গোয়া)
- আগোন্ডা বিচ (গোয়া)
- ভার্কা বিচ (গোয়া)
- বেনাউলিম বিচ (গোয়া)
রাধানগর বিচের বিশেষত্ব
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নির্মল পরিবেশই হলো রাধানগর সৈকতের প্রধান বিশেষত্ব। ভারতের অধিকাংশ জনপ্রিয় সৈকতের তুলনায়, রাধানগরের পরিবেশ অনেক বেশি শান্ত আর কোলাহলমুক্ত।

এর প্রধান কারণ হলো স্বরাজ দ্বীপটি আন্দামানের মূল ভূখণ্ড থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত; পাশাপাশি সীমিত যাতায়াত মাধ্যম এবং কঠোর পর্যটন নিয়ন্ত্রণ রাধানগর বিচের পরিবেশকে আজও নির্মল রেখেছে। পোর্টব্লেয়ার থেকে হ্যাভলক আইল্যান্ড পৌঁছানোর একমাত্র উপায় জলপথ কেবলমাত্র সরকারি ও অল্পকিছু বেসরকারি ফেরির মাধ্যমে এখানে পৌঁছানো যায়। পাশাপাশি, রাধানগর বিচের আশেপাশে সীমিত সংখ্যক হোটেল থাকার কারণে এলাকাটিতে খুব বেশি জনসমাগম হতে পারেনা।
সংক্ষেপে:
- বিচ্ছিন্ন অবস্থান
- সীমিত যাতায়াত ব্যবস্থা
- নিয়ন্ত্রিতপর্যটন ব্যবস্থা
- রাধানগর বিচের কাছে সীমিত থাকার ব্যবস্থা
- এই অঞ্চলের হোটেলগুলি প্রিমিয়াম রিসোর্ট এবং ভাড়া বেশি
কিভাবে উপভোগ করবেন রাধানগর সৈকতকে
সৈকতের প্রবেশদ্বার পেরোতেই এক বিস্ময়কর প্রশান্তি আপনাকে ছুঁয়ে যাবে। চারিপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, শান্ত পরিবেশ। সমুদ্রের নীল জল, বালুচরের সাদা বালি ও সৈকতজোড়া সবুজ বনাঞ্চলের মিশ্রণে তৈরি হয়েছে এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এমন এক জায়গাতে আপনি শুধু চুপচাপ বসে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে করতে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটিয়ে দিতে পারবেন। তবে তার ফুরসৎ আপনি পাবেন না খুব একটা, রাধানগর ঘুরতে এসে করার আছে আরো অনেক কিছু।
রাধানগরে প্রাতঃভ্রমণ (Morning at Radhanagar Beach)
দিঘা বলুন বা পুরী বলুন, কিংবা রাধানগরে বলুন, ভোরবেলা হলো সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময়। যদিও এখান থেকে পুরী-দিঘার মতো সূর্যোদ্বয়ের দৃশ্য দেখা যায় না, তবুও সকালটা সুন্দর, স্নিগ্ধ। সূর্যের সোনালি আলো পেছন থেকে এসে সাদাবালির চড় পেরিয়ে পোঁছে যায় নীল সমুদ্র অব্দি; বালিচড়ে আলো পড়ে সৃষ্টি হয় অপূর্ব আলোছায়া। সে এক দারুন দৃশ্য।
সৈকতের বামপ্রান্তে রয়েছে একটা লেগুন বা ব্যাকওয়াটার; সকালবেলার জোয়ারে সেটা যখন একেবারে টইটুম্বুর হয়ে ওঠে, তখন আর জেলেদের আনন্দ দ্যাখে কে! কোমর বেঁধে দু চারজন জেলে নেমে পরে জাল নিয়ে এমন এক অসাধারণ পরিবেশে কাকভোরে জেলেদের জাল ছোঁড়ার দৃশ্য এক্কেবারে ক্যামেরাবন্দি করে রাখার মতো! ফোটোজেনিক।

মর্নিং জগিং-এর অভ্যেস আছে?
যদি আপনার সকালবেলায় হালকা জগিং করা বা যোগব্যায়াম করার অভ্যেস থাকে, রাধানগর বিচে এসে আপনি সাচ্ছন্দে সেই অভ্যেস জারি রাখতে পারেন। আশেপাশে দেখতে পাবেন অনেক বিদেশি পর্যটক বিচ বরাবর ছোটাছুটি করছেন, কেউবা একপাশে বসে যোগাভ্যাসও সেরে নিচ্ছেন।
ওয়াচটাওয়ার থেকে সৈকতের পূর্ণ দৃশ্য

সৈকতের প্রবেশপথের কাছাকাছি একটি কাঠের ওয়াচটাওয়ার আছে; এখানে উঠে আপনি সমগ্র সৈকতের পূর্ণ দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন , মানে ইংরেজিতে যাকে বলে Panaromic View আরকি।
রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে দৃশ্য যেন একেবারে স্বপ্নের মতো—ফিরোজা নীল জলরাশি, দুধসাদা ফেনিল ঢেউ, স্নিগ্ধ বাতাস, আর সবুজের ছায়া — আহা!
রাধানগরে সমুদ্রস্নান (Seabath at Radhanagar Beach)
রাধানগর বিচ আন্দামানের অন্যতম নিরাপদ সমুদ্রস্নানের জায়গাগুলির মধ্যে একটি। ঢেউ মাঝারি, স্রোত কম এবং পাথর বা প্রবাল নেই। একইসাথে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর। লাইফগার্ডরা সর্বক্ষণ ঘোরাফেরা করেন, এবং একটি নির্ধারিত এলাকার মধ্যেই স্নান করার অনুমতি দেওয়া হয়।

মনে রাখবেন:
- বিকেল ৫টার পর স্নান নিষিদ্ধ, কারণ তখন জোয়ার ওঠে
- স্নান করার সময় বিচের কাছাকাছি থাকবেন, একটু গভীরে গেলেই সাংঘাতিক জলের টান
- এখানে কোনো প্রবাল নেই, তাই প্রবালের খোঁজে গভীরে যাবেন না; সেটি বিপজ্জনক
- বিচে প্রবেশপথের কাছে শাওয়ার/বাথরুম ও লকার ভাড়া পাওয়া যায়
জঙ্গল ট্রেকিং
যদি আপনি একটু অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন, তাহলে বেরিয়ে পড়ুন ছোট্ট একটা জঙ্গল ট্রেকিং-এ সৈকতের বাঁ দিকের জঙ্গলে পাহাড়ি পথ ধরে পৌঁছে যান “নীল’স কোভ” নামে একটি নির্জন লেগুনে। জঙ্গলে চলার পথে শুনতে পাবেন ঝিঁঝির ডাক, পাখির গান, পাতার সড়সড় শব্দ, আর মাঝেমধ্যে সমুদ্রের গর্জন —প্রকৃতির সঙ্গে আত্মাকে এক সুতোয় বাঁধার এই অনন্য সুযোগ একেবারেই হাতছাড়া করবেন না।
তাড়াতাড়ি মধ্যাহ্ন ভোজন সেরে বেরিয়ে পড়ুন; কোন সকালের দিকে বেরোবেন না, তখন রাধানগর বিচের বামপাশের backwater টি জোয়ারের জল ঢুকে অনেক চওড়া হয়ে যায়, তখন আপনি এটি পেরোতে পারবেন না। বেলার দিকে ভাঁটা হলে এটি একটি সরু জলধারায় পরিণত হয়; তখন আপনি সহজেই পেরিয়ে যেতে পারবেন।

রাধানগর বিচ থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য
সারাদিন আপনি যেখানেই ঘুরতে যান, বিকেল ৪টা থেকে ৪:৩০-এর মধ্যে অবশ্যই রাধানগর সৈকতে ফিরে আসুন। তা না হলে মিস করবেন সূর্যাস্তের রঙিন মুহূর্তগুলোকে।
সূর্যাস্তের আগে আর পরে নানা রঙের খেলায় মেতে ওঠে আকাশ-বাতাস-জল, রাধানগর সৈকতটির রূপ একেবারে বদলে যায়। কখনও বা জলের রং নীল থেকে কমলা-লাল হয়ে ওঠে, আবার কখনো আকাশ হয়ে ওঠে বেগুনি; মেঘের দল ভেসে বেড়ায় এপার থেকে ওপর; কখনো বা থেমে যায় একরাশ লাল রঙের মাঝে। আর সূর্য ডুবে যাওয়ার সাথে সাথে সমগ্র সৈকত আরো একবার স্নান করে রোমান্টিক আবছা আলোর ধারায়।
সন্ধ্যার প্ল্যান কি হবে?
সূর্যাস্তের পর সাধারণ পর্যটকদের সৈকতে ঘোরাঘুরি নিষিদ্ধ; নিরাপত্তার কারণে এই নিয়ম। কেবলমাত্র সমুদ্রের পশে থাকা Barefoot Resort বা Taj Exotica-র অতিথিরা হোটেলের প্রাইভেট বিচে ঘুরতে পারেন, সেক্ষেত্রে দায়িত্ব হোটেল কতৃপক্ষের।
সুতরাং যদি আপনি এই রিসর্টগুলোর কোনো একটিতে থাকেন, তাহলে ক্যান্ডেল-লাইট ডিনারসহ, সৈকতে নৈশভ্রমণের সুযোগ আপনার কাছে থাকছে। তবে আপনি যদি কাছাকাছি অন্যকোনো বাজেট হোটেলে থাকেন, তাহলে কি করবেন?
হ্যাঁ; তবুও সন্ধ্যাটা উপভোগ্য হতে পারে—তবে একটু অন্যভাবে।
একটি দারুণ অপশন হলো The Swimming Elephant রেস্তোরাঁয় যাওয়া—Barefoot Resort-এর পাশে অবস্থিত। এখানকার চমৎকার খাবার ও সুন্দর পরিবেশ আপনার সন্ধ্যাটা স্মরণীয় করে তুলতে পারে।
রাধানগর বিচ ছাড়াও স্বরাজ দ্বীপে আরও কিছু ভ্রমণস্থান
যদি আপনি স্বরাজ দ্বীপে (Havelock Island) ২ -৩ দিনের ছুটিতে যান, তাহলে আশেপাশের আরও কয়েকটি জায়গা থেকে অবশ্যই ঘুরে আসুন। মোটরবাইক বা গাড়ি ভাড়া করে আপনি সহজেই এইসব জায়গাগুলি ঘুরে নিতে পারেন।
- এলিফ্যান্ট বিচ (প্রায় ২.৩ কিমি দূরে): স্নরকেলিং এবং অন্যান্য ওয়াটার স্পোর্টসের জন্য আদর্শ।
- নিলস কোভ (১.৫ কিমি হাঁটা পথ): এক নির্জন লেগুন, যা উপকূলীয় অরণ্যের মাঝে অবস্থিত, প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য উপযুক্ত।
- কালাপাথর বিচ (১৩ কিমি): কালো পাথর, সূর্যোদয় এবং ছবির মতন দৃশ্যের জন্য জনপ্রিয়।
- বিজয়নগর বিচ (১২ কিমি): নিরিবিলি, আরামদায়ক পরিবেশ; হেঁটে ঘোরা ও রিলাক্স করার জন্য উপযুক্ত।
- গোবিন্দনগর বিচ (১০ কিমি): বেশিরভাগ হোটেল এবং ডাইভিং সেন্টারগুলির কাছাকাছি হওয়ায় খুব জনপ্রিয়।
রাধানগর বিচের আশেপাশে স্কুবা ডাইভিং (Scuba at Radhanagar Beach)
Havelock Island স্কুবা ডাইভের স্বর্গরাজ্য; ডাইভিং বা ওয়াটার স্পোর্টস ছাড়া হ্যাভলক ট্রিপ এক কোথায় অসম্পূর্ণ। যদিও রাধানগর বিচে সরাসরি স্কুবা ডাইভের ব্যবস্থা নেই, কিন্তু কাছাকাছি গোবিন্দনগর বিচ (দ্বীপের পূর্বদিকে) স্কুবার জন্য আদর্শ। সুতরাং একটাদিন সকাল সকাল চলে যান সেখানে আর উপভোগ করে আসুন জলের নিচে থাকা অদেখা সাম্রাজ্যের সরাসরি দৃশ্য।
সেখানে কয়েকটি পেশাদার ডাইভিং সেন্টার রয়েছে:
এখানে প্রথমে ছোট একটা ১০-১৫ মিনিটের বেসিক ডাইভিং কোর্স করিয়ে উপযুক্ত নিরাপত্তাসহ জলের তলায় নিয়ে যাওয়া হয়, সুতরাং ভয়ের কিছু নেই, এমনকি যদি আপনি সাঁতার কাটতে নাও জানেন, তাহলেও কোনো সমস্যা নেই। Seahawks Scuba-র সাথে আমাদের ডাইভিং অভিজ্ঞতা ছিল দুর্দান্ত। প্রশিক্ষকরা ধৈর্যশীল, যন্ত্রপাতিও বেশ ভালো মানের ছিল এবং সর্বোপরি সমুদ্রের তলার অভিজ্ঞতা বাস্তবেই ছিলো অবর্ণনীয়, অসাধারণ।
উল্লেখ্য, এলিফ্যান্ট আইল্যান্ডেও আপনি স্নোর্কেলিং বা স্কুবা ডাইভ করতে পারেন ।
রাধানগর বিচের কাছে থাকার জায়গা (Hotels near Radhanagar Beach)
আপনার Havelock ট্রিপ স্মরণীয় করে রাখার জন্য, রাত্রিবাসের সঠিক স্থান বেছে নেওয়া খুব জরুরি। Radhanagar Beach-এ থাকার জায়গা সীমিত হলেও, যেকটি আছে তার মধ্যে কয়েকটি খুবই উন্নতমানের। আসুন দেখে নিই একবার:
Barefoot Havelock
যদি আপনি প্রকৃতির মাঝে বিলাসবহুল আবাসনের স্বাদ নিতে চান, তাহলে Barefoot Resort আপনার জন্য পারফেক্ট। সৈকতের খুব কাছেই অবস্থিত, এই রিসর্টটি জঙ্গলঘেরা শান্ত পরিবেশে অবস্থিত।
রুম টাইপ:
- Tented Cottage – বিলাসবহুল টেন্ট, প্রায় ৪৬ বর্গমিটার
- Nicobari Cottage – ঐতিহ্যবাহী নিকোবরী বাড়ির ডিজাইন
- Andaman Villa – সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি, সুন্দর ডিজাইন
রেন্ট শুরু: ₹১৫,০০০/রাত
সুবিধা:
- রেস্টুরেন্ট ও বার
- বিনামূল্যে পার্কিং ও লাগেজ স্টোরেজ
- প্রাইভেট বারান্দা, কফি/টি মেকার, মিনিবার
- গাইডেড জঙ্গল ট্রেক, স্কুবা ডাইভিং, স্নরকেলিং
প্রকৃতি, নির্জনতা ও রোমান্টিক পরিবেশ পছন্দ করলে এটি আপনার থাকার জন্য আদর্শ জায়গা।
Taj Exotica Resort & Spa, Havelock
সবচেয়ে বিলাসবহুলভাবে থাকার জন্য Taj Exotica আদর্শ। স্বরাজ দ্বীপে ৪৬ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এই রিসর্টে আপনি পাবেন ইনফিনিটি সুইমিং পুল, ব্যক্তিগত ভিলা, স্পা, স্নরকেলিং, গলফ কোর্স, এবং আরও অনেক কিছু।

রেন্ট শুরু: ₹৪০,০০০/রাত
সুবিধা:
- সুইমিং পুল, সান টেরেস
- গ্লাস ছাদের restaurent ও Jiva Spa
- স্কুবা, স্নরকেলিং, নাইট কায়াকিং
- যোগ সেন্টার, শেল কারুশিল্প কর্মশালা
- কনটিনেন্টাল ব্রেকফাস্ট
হানিমুন কাপল ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য একদম পারফেক্ট।
Harmony Resort
কম বাজেটে রাধানগরে থাকার জায়গা চাইলে Harmony Resort বেশ উপযুক্ত। সৈকতের মাত্র ৪০০ মিটার দূরে এই কাঠের কেবিন স্টাইলের রিসর্টটি সাশ্রয়ী এবং মোটামুটি আরামদায়ক।

রেন্ট শুরু: ₹১,৫৫০/রাত
সুবিধা:
- সাশ্রয়ী খাবারের ব্যবস্থা
- ফ্রি পার্কিং ও ওয়াইফাই
- নিজস্ব বাথরুম, টিভি, বাগান দৃশ্য সহ বারান্দা
ব্যাকপ্যাকার, পরিবার ও সলো ট্রাভেলারের জন্য সেরা বাজেট অপশন।
রাধানগর বিচের আশেপাশে খাবার ও Restaurants
Havelock Island-এর রাধানগর বিচের আশেপাশে বেশ কিছু ভালো খাবারের জায়গা আছে—
অবশ্যই খেয়ে দেখুন আন্দামানের হলুদ নারকেল Yellow Coconut – স্থানীয়রা বিক্রি করে; মিষ্টি জল এবং নরম শাঁস অসাধারণ স্বাদের।
সেরা Restaurants:
- Shoreline (Taj Exotica) – লাঞ্চ ও ডিনারের জন্য প্রিমিয়াম
- Turtle House (Taj Exotica) – আরেকটি বিলাসবহুল বিকল্প
- The Swimming Elephant (Barefoot) – আরামদায়ক পরিবেশে খাবার ও ড্রিঙ্ক
- Mohwa Café – হালকা খাবার ও স্ন্যাক্সের জন্য ভালো
🚢 রাধানগর বিচে কীভাবে যাবেন?
ধাপ ১: Port Blair থেকে Swaraj Dweep পৌঁছান
আগে থেকেই ত্রুজ/ফেরি বুক করে রাখুন। শেষ সময়ে বুকিং পাওয়া বেশ মুশকিল। কয়েকটি নির্ভরযোগ্য পোর্টাল:
- Experience Andamans
- MakeMyTrip
- Go2Andaman
- Online Andaman
বিশেষ টিপস: আন্দামানে আবহাওয়া অনির্দিষ্ট । খারাপ আবহাওয়ার জন্য ফেরি বাতিল হতে পারে। অনলাইন বুকিং বাতিল হলে টাকা ফেরত পেলেও ট্রিপ মিস করতে পারেন। স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে বুক করলে তারা আবহাওয়ার পরিস্থিতি অনুযায়ী সময়সূচি বদলে আপনাকে বিকল্প জাহাজে পাঠাতে পারেন। আমাদের হ্যাভলক ট্রিপের সময় এমনটাই হয়েছিল।
ধাপ ২: জেটি থেকে রিসর্টে পৌঁছানো
জেটি থেকে Radhanagar Beach প্রায় ১০ কিমি। আপনি নিতে পারেন—
- ভাড়া গাড়ি বা শেয়ার ট্রান্সপোর্ট
- স্থানীয় বাস
- রিসর্ট কর্তৃক আয়োজিত pickup van
বিকল্পভাবে, স্কুটার বা বাইকও ভাড়া পাওয়া যায়।

স্বরাজ দ্বীপ বা রাধানগর বিচে যাওয়ার আদর্শ সময় কখন ?
নভেম্বর থেকে মার্চ – সেরা সময়; আবহাওয়া পরিষ্কার থাকে, ওয়াটার স্পোর্টসের জন্য উপযুক্ত।
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর – সুন্দর তবে মাঝে মাঝে ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
মে-আগস্ট (বর্ষা) – এড়িয়ে চলা ভালো; সমুদ্র উত্তাল থাকে এবং ওয়াটার স্পোর্টস নিষিদ্ধ থাকে।
শেষ কথা: Trip to Radhanagar Beach
স্বরাজ দ্বীপের রাধানগর বিচ, তার সাদা বালি, নীল জল, নির্জনতা এবং রোমান্টিক পরিবেশের জন্য বারবার এশিয়ার সেরা বিচের তালিকায় উঠে আসে। হ্যাভলক ঘুরতে এলে, অন্তত একদিন এখানে থেকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করুন, জঙ্গলে হাঁটুন, স্থানীয় খাবার খান, আর সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সঙ্গে রোমান্টিক পরিবেশ উপভোগ করুন।
যদি আপনার মোর রাধানগর বিচ সম্পর্কিত আরোও কোনো প্রশ্ন জেগে তাহলে নিচে কমেন্ট বক্সে লিখে ফেলুন, আমরা আপনাকে সাহায্য করতে পারলে আনন্দিত হবো।