You are currently viewing কেদারনাথে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ৭ | আবারও প্রশ্নের মুখে বিমানব্যবস্থায় যাত্রী নিরাপত্তা

কেদারনাথে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ৭ | আবারও প্রশ্নের মুখে বিমানব্যবস্থায় যাত্রী নিরাপত্তা

  • Post author:admin
  • Post last modified:জুন 16, 2025
  • Post comments:0 Comments

রবিবার ভোরে কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশী ফেরার পথে একটি Aryan Aviation হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে যায়। দুর্ঘটনায় পাইলটসহ মোট সাতজন যাত্রী প্রাণ হারান। ঘটনাটি (Kedarnath Helicopter Crash) ঘটে গৌরীকুণ্ড ও সোনপ্রয়াগ-এর মাঝখানের একটি ঘন জঙ্গলে, স্থানীয় সময় ভোর ৫:২০ মিনিটে।

মাত্র তিন দিন আগেই ঘটে যাওয়া আহমেদাবাদে Boeing 787 Dreamliner বিমানের মর্মান্তিক ঘটনার স্মৃতি এখনো জেগে রয়েছে, চলছে উদ্ধারকার্য, তদন্ত। এরই মধ্যে এই কেদারনাথ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ভারতের বিমান পরিষেবার নিরাপত্তা নিয়ে আবারও বড় প্রশ্ন তুলে দিলো।

Read in English | हिंदी में पढ़ें

কিভাবে ঘটলো Kedarnath Helicopter Crash?

উত্তরাখণ্ড সিভিল এভিয়েশন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (UCADA) এক বিবৃতিতে জানায়, হেলিকপ্টারটি কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশী যাওয়ার পথে হঠাৎ খারাপ আবহাওয়ার কবলে পড়ে। পাইলট হেলিকপ্টারটিকে উপত্যকা থেকে বের করে আনতে চেষ্টা করেন, কিন্তু সফল না হওয়ার কারণে তা দুর্ঘটনার শিকার হয়।

রাহুল চৌবে, জেলা পর্যটন কর্মকর্তা ও রুদ্রপ্রয়াগ জেলার হেলিকপ্টার পরিষেবার নোডাল অফিসার, জানান, “হেলিকপ্টারটিতে মোট সাতজন ছিলেন – এক পাইলট, পাঁচজন পূণ্যার্থী এক শিশু।” যাত্রীরা  উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র গুজরাট রাজ্যের বাসিন্দা ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধার অভিযান

গৌরীকুণ্ড এলাকার স্থানীয় কিছু বাসিন্দা সকালে ঘাস সংগ্রহে গিয়ে হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পান এবং তখনই  প্রশাসনকে খবর দেন। এরপর NDRF ও SDRF-এর দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।

উত্তরাখণ্ড পুলিশের আইন ও শৃঙ্খলা বিভাগীয় অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল (ADG), ডঃ ভি মুরুগেশন বলেন, “গৌরীকুণ্ডে যে হেলিকপ্টারটি ভোর থেকে নিখোঁজ ছিল, সেটিই দুর্ঘটনায় পড়েছে।” উদ্ধারকার্য চালানোর জন্য জরুরি বাহিনী, স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনের একাধিক ইউনিট সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করে।

একের পর এক বিমান দুর্ঘটনা, বাড়ছে উদ্বেগ

এই মরশুমে চার ধাম তীর্থযাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে গত ৪০ দিনের মধ্যে ছোট-বড়ো ঘটনা মিলিয়ে এটি পঞ্চম হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা। এর আগে, ৭ জুন, আরেকটি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ঘটে; সেই কপ্টারটিও পাঁচজন পূণ্যার্থীকে বহন করছিল। প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সেদিন হেলিকপ্টারটি বারাসু-এর কাছে গুপ্তকাশী–গৌরীকুণ্ড হাইওয়েতে জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়। অল্পের জন্য আশেপাশের বিল্ডিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়া থেকে রক্ষা পায়, তবে একটি পার্ক করা গাড়িতে ধাক্কা লাগে। সৌভাগ্যবশত, যাত্রীরা সবাই অক্ষত থাকেন, শুধু পাইলট সামান্য আঘাত পান।

এমন একের পর এক ঘটনা ঘটার হলে নিঃসন্দেহে উচ্চ-পার্বত্য পূণ্যস্থানগুলিতে হেলিকপ্টার পরিষেবার নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। বহু পূণ্যার্থী যাঁদের পক্ষে চার ধাম যাত্রার কঠিন  পথ হেঁটে অতিক্রম করা সম্ভব হয়না, তারা হেলিকপ্টার পরিষেবার উপর বিশেষভাবে নির্ভর করেন। কিন্তু বারংবার এইধরণের ঘটনা ঘটার ফলে, রক্ষণাবেক্ষণ, আবহাওয়ার অনুসারে যাত্রা প্রস্তুতি, ও সুরক্ষার মান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।

Kedarnath Helicopter Crash

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, মাত্র তিন দিন আগেই আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া Boeing 787 Dreamliner-এর ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার পরেও বোঝা যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ বা সরকার, কেউই বিমান নিরাপত্তার  বিষয়ে কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়নি। স্বাভাবিকভাবেই এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—ভারতের বিমান পরিষেবা কি যথেষ্ট নিরাপদ? এবং সরকার বা প্রশাসনের নজরদারি কি আদৌ যথেষ্ট? এইসব কর্মক্ষেত্রে কি যথেষ্ট পরিমান দক্ষ কর্মচারী রয়েছেন ?

ভারতের বিমান পরিষেবায় কি বিপদ সংকেত?

বারবার বিমান বা হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা এবং আকাশপথে চলাচলের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত এইধরণের সংকট এখন জাতীয় পর্যায়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। একের পর এক প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও আবহাওয়াজনিত পরিচালনা সমস্যা সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাচ্ছে – অক্ষপথে ভারতের যাত্রীবাহী পরিষেবার মান বর্তমানে কোথায় দাঁড়িয়ে?

Kedarnath Helicopter Crash আমাদের আরোও একবার স্মরণ করিয়ে দিলো, যাত্রী পরিষেবার অর্থ শুধুমাত্র জনগণের যাত্রার চাহিদা মেটানো বা ব্যবসায়িক বিষয় নয়, একইসাথে আরো ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যাত্রী নিরাপত্তা; প্রয়োজন সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, পর্যাপ্ত পরিমানে দক্ষ কর্মচারী নিয়োগ, উন্নত আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থা, এবং কঠোর নিরাপত্তা প্রোটোকল।

প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কাছে এখন সময় এসেছে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখার এবং যাত্রী নিরাপত্তা রক্ষায় যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার।

Ref/ Source: NDTV

Articles

মন্তব্য করুন